শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি॥ পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে পায়রা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তেতুলবাড়িয়া গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে ৮গ্রামসহ আমতলী ও তালতলীর নদী তীরবর্তী অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানির নীচে তলিয়ে গেছে আউশের ধান ও আমনের বীজতলা। তালতলীতে ভেসে গেছে অর্ধ শতাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ। এতে প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছে এ দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।
জানা গেছে, পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে পায়রা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪৩ সেন্টিমিটার বেশী পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেতুলবাড়িয়া গ্রামের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে তেতুলবাড়িয়া, গোরাপাড়া, খারাকান্দা, সনবুনিয়া, ফুলুপাড় ও নলবুনিয়া সাইক্লোন সেল্টারসহ ৮ গ্রাম ৪ দিন ধরে প্রতিদিন দুবার করে জোয়ারের পানিতে ভাসছে।
তেতুলবাড়িয়া গ্রামের চম্পাভানু, শিরিন বেগম বলেন, এই চার দিন ধইর্যা পানি উইঠ্যা চুলা ডুইব্যা যাওয়ায় দুপুরে পোলা মাইয়া লইয়া খাইতে পরি নাই। একই গ্রামের মনির হাওলাদার বলেন, জোয়ারের পানির তোরে মোর জাল ভাসাইয়া লইয়া গ্যাছে। হেতে মোর ২ লক্ষ টাহা ক্ষতি অইছে। একই গ্রামের হাবিব আকন বলেন, জোয়ারের পানিতে মোর ঘেরের ২ লক্ষ টাকার মাছ ভাইস্যা গ্যাছে।
জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে আমতলীর উপজেলার ঘোপখালী, বালিয়াতলী, পশুরবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, পশ্চিম আমতলী, ফেরীঘাট, পুরাতন লঞ্চঘাট, আমুয়ার চর, পানি উন্নয়ন বোর্ড এলাকা, আঙ্গুলকাটা, গুলিশাখালী ও হরিদ্রবাড়িয়া তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া, ফকিরহাট, সোনাকাটা, নিদ্রাসকিনা, তেতুঁলবাড়িয়া, আশারচর, নলবুনিয়া, তালুকদারপাড়া, চরপাড়া, গাবতলী, মৌপাড়া, ছোটবগী, জয়ালভাঙ্গা, পচাঁকোড়ালিয়াসহ আরো অনেক নিম্নাঞ্চল পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া ঝুঁকিতে রয়েছে বালিয়াতলী, পশুরবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, পশ্চিম ঘটখালী, গুলিশাখালী ও হরিদ্রবাড়িয়া এলাকার পায়রা সংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।
গত ৪ দিন ধরে পায়রা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমতলীর ফেরির গ্যাংওয়ে তলিয়ে যাওয়ায় যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহতে হচ্ছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ না থাকায় গাজীপুর বন্দর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল বাতেন দেওয়ান।
আমতলী উপজেলার গেজ পাঠক (পানি মাপক) মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, শুক্রবার পয়রা নদীর বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।
বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, যে সকল জায়গায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ দুর্বল হয়ে গেছে সেগুলো সংস্কার এবং তেতুলবাড়িয়া গ্রামের বাঁধ দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply